জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের আশ্রয়দাতা হিসেবে বাংলাদেশের প্রতি সমর্থন নিশ্চিত করতে তাঁর সংস্থা (জাতিসংঘ) আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আরও সক্রিয় করতে কাজ চালিয়ে যাবে। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে চলমান পরিবর্তনপ্রক্রিয়াকে সমর্থন জানাচ্ছে জাতিসংঘ।
গত ২৫ ফেব্রুয়ারি, মঙ্গলবার, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসকে পাঠানো এক চিঠিতে গুতেরেস এসব কথা উল্লেখ করেন।
চিঠিতে জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, রোহিঙ্গা সংকটের কারণে বাংলাদেশসহ এই অঞ্চলের ওপর পড়া প্রভাব এবং রাখাইনে মানবিক সংকটের আরও অবনতি নিয়ে তিনি প্রধান উপদেষ্টার উদ্বেগের সঙ্গে একমত।
গুতেরেস বলেন, “রোহিঙ্গাদের নিরাপদ, স্বেচ্ছামূলক প্রত্যাবর্তনের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করতে এবং মিয়ানমারের সংকটের একটি রাজনৈতিক সমাধান খুঁজতে আমি আঞ্চলিক অংশীদার, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর জোট (আসিয়ান) এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর সঙ্গে কাজ চালিয়ে যাব।”
তিনি আরও জানান, জাতিসংঘের বাংলাদেশ ও মিয়ানমারভিত্তিক কর্মী দলকে নির্দেশনা দিতে তাঁর জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের আহ্বান জানিয়েছেন, যেন তাঁরা রাখাইন সম্প্রদায়ের জন্য মানবিক সহায়তা এবং জীবিকার সুযোগ আরও বৃদ্ধি করতে পারেন।
গুতেরেস আশ্বস্ত করেন যে জাতিসংঘ এই ইস্যুতে অগ্রাধিকারভিত্তিতে কাজ করবে এবং জরুরি ত্রাণ সমন্বয়কারী ও মিয়ানমারের আবাসিক ও মানবিক সমন্বয়কারীর মাধ্যমে সারা মিয়ানমারে নিরাপদ, দ্রুত, টেকসই ও বাধাহীন মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর ব্যবস্থা নিশ্চিত করবে।
জাতিসংঘ মহাসচিব আশা প্রকাশ করেন যে রোহিঙ্গা মুসলিম এবং মিয়ানমারের অন্যান্য সংখ্যালঘুদের পরিস্থিতি নিয়ে একটি উচ্চ পর্যায়ের সম্মেলন বিশ্বব্যাপী নতুন মনোযোগ আকর্ষণ করবে এবং তাদের জন্য আরও বিস্তৃত সমাধান বের করার পথ সুগম করবে।
গুতেরেস বলেন, “জাতিসংঘের ব্যবস্থা কীভাবে প্রক্রিয়াটিকে সর্বোত্তম সমর্থন করতে পারে, তা বোঝার জন্য সদস্যরাষ্ট্রের পরামর্শ অনুসরণ করে আমরা সম্মেলনের সম্মত ফলাফল ও পরিকল্পনার জন্য অপেক্ষা করছি।”
তিনি পুনরায় নিশ্চিত করেন যে জাতিসংঘ বাংলাদেশের প্রতি দৃঢ় সংহতি জানাচ্ছে এবং অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে চলমান পরিবর্তনপ্রক্রিয়াকে সমর্থন করছে।
৪ ফেব্রুয়ারি, মুহাম্মদ ইউনূসের পাঠানো চিঠির জন্য তাঁকে ধন্যবাদ জানান গুতেরেস। এই চিঠি ৭ ফেব্রুয়ারি জাতিসংঘ মহাসচিবের সঙ্গে বৈঠকের সময় প্রধান উপদেষ্টা খলিলুর রহমানের মাধ্যমে পৌঁছে ছিল।