ঢাকা, ১৪ জুলাই ২০২৫ – জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) আগামী ৩ আগস্ট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ছাত্র-জনতার উপস্থিতিতে তাদের ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ এবং দলীয় ইশতেহার পাঠের ঘোষণা দিয়েছে। এই কর্মসূচি ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উদযাপন এবং নতুন বাংলাদেশ গড়ার রূপরেখা প্রকাশের লক্ষ্যে আয়োজিত হচ্ছে। এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম এই ঘোষণা দিয়ে বলেছেন, “আমরা স্বৈরাচার ও ফ্যাসিবাদমুক্ত একটি নতুন বাংলাদেশ গড়তে চাই, যেখানে বৈষম্য, অন্যায় ও সন্ত্রাসের স্থান হবে না।”
কর্মসূচির বিবরণ
এনসিপির নেতৃবৃন্দ জানিয়েছেন, ৩ আগস্টের এই সমাবেশে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণ করা হবে এবং সাংবিধানিক সংস্কারের মাধ্যমে শহীদদের স্বীকৃতি প্রদানের দাবি জোরালোভাবে উত্থাপিত হবে। নাহিদ ইসলাম বলেন, “সরকার জুলাই ঘোষণাপত্র প্রকাশে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, কিন্তু ৩০ কার্যদিবস পেরিয়ে গেলেও কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। তাই আমরা ছাত্র-জনতার আকাঙ্ক্ষা ও প্রত্যাশার ভিত্তিতে এই ঘোষণাপত্র পাঠ করব।”
এই কর্মসূচিতে এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা, যার মধ্যে আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, সদস্য সচিব আখতার হোসেন, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ, সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা, এবং মুখ্য সমন্বয়ক নাসিরুদ্দিন পাটওয়ারী উপস্থিত থাকবেন।
প্রেক্ষাপট
২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদী শাসনের অবসান ঘটে এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পালাতে বাধ্য করা হয়। এনসিপি এই আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের দ্বারা গঠিত একটি নতুন রাজনৈতিক দল, যারা গণতন্ত্র, সমতা এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কাজ করছে। দলটি জুলাই শহীদদের স্মরণে সারাদেশে ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচি পালন করছে, যার অংশ হিসেবে তারা শহীদ পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ ও পথসভা আয়োজন করেছে।
নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, “স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে স্বাধীনতা রক্ষা করা কঠিন। তাই আমাদের এই স্বাধীনতা যাতে হারিয়ে না যায়, সেজন্য আমাদের সচেতন থাকতে হবে। এনসিপি এই লক্ষ্যে গঠিত হয়েছে।”
অন্যান্য কর্মসূচি
এনসিপি জানিয়েছে, ৩ আগস্টের কর্মসূচির পাশাপাশি তারা ১৬ জুলাইকে ‘বৈষম্যবিরোধী শহীদ দিবস’ এবং ৫ আগস্টকে ‘ছাত্রজনতার মুক্তি দিবস’ হিসেবে পালন করবে। এই দিনগুলোতে সারাদেশে বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হবে, যার মাধ্যমে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ঐতিহাসিক তাৎপর্য তুলে ধরা হবে।
আহ্বান
এনসিপি সকল তরুণ, ছাত্র এবং নাগরিকদের ৩ আগস্ট শহীদ মিনারে তাদের কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে। তারা বলছে, এই ঘোষণাপত্র বাংলাদেশের মানুষের মুক্তির জন্য একটি ঐতিহাসিক পদক্ষেপ হবে। আগ্রহী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানগুলো এনসিপির অফিসিয়াল যোগাযোগ চ্যানেলের মাধ্যমে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করতে পারেন।